May 20, 2024, 5:14 am

সংবাদ শিরোনাম
শাহপরাণ (রহঃ) থানা পুলিশের অভিযানে ১৯,৬০০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ ০৩ জন গ্রেফতার উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযানে ৪ আরসা সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে আনুমানিক ছয় কোটি টাকা মূল্যমানের ৮৬০০ লিটার বিদেশী মদসহ ০৩ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ উলিপু‌রে পাঁচ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক কাউনিয়ায় (ব্লাস্ট) এর উদ্দোগে ধর্মীয় সম্প্রীতির উপরে আলোচনা সভা কুড়িগ্রামে ১ টাকায় ১০ টি পরিবেশ বান্ধব পাখা বিক্রি করছে ফুল জৈন্তাপুরে গভীর রাতে পুলিশের অভিযানে ৬১৫ বোতল মদ ৮ কেজী গাঁজা উদ্ধার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ক্ষেতলালে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সার্কেল হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ রানার যোগদান

সংসদ প্রাঙ্গণে ছায়েদুল হকের জানাজা, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

সংসদ প্রাঙ্গণে ছায়েদুল হকের জানাজা, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

জাতীয় সংসাক্ষী হাজির না হওয়ায় হিযবুতকর্মীদের কয়েকডজন মামলার বিচার বিলম্বিত
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের কর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা অনুমোদনের অভাবে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর এখন বিচার বিলম্বিত হচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হাজিরের ব্যর্থতায়। রাষ্ট্রবিরোধী উগ্রপন্থি কর্মকা-ের অভিযোগে সরকার ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার এ সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে ঢাকায়। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বেশ কিছু মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দিলেও নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নেওয়ায় সেগুলো আটকে যায়। সেই ত্রুটি সংশোধনের পর এরকম ৪০টি মামলার নথিপত্র গতবছর ২৬ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে বিচারের জন্য। গতবছর সেপ্টেম্বরে মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা মামলাগুলো বিচারের জন্য আমলে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন। অভিযোগ গঠনের পর তারিখের পর তারিখ পড়লেও বেশিরভাগ মামলায় সাক্ষী হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। এমনকি জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়না জারি করেও কাজ হচ্ছে না। আর সাক্ষীদের মধ্যে যারা পুলিশ, তাদের ক্ষেত্রে আইজিপির মাধ্যমে পরোয়ানা পাঠিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে প্রসিকিউশন বিভাগে দায়িত্বরত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এবং পুলিশের মধ্যে তেমন কোনো তাগিদ নেই। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ও সংহতি বিপন্ন করার জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অভিযোগে হিযবুত তাহরীরের কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বেশ কিছু মামলা ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এর অনেকগুলোতেই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে; কিন্তু সাক্ষীর দেখা নেই। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) ছাত্র রাউফুর রশীদ আবীর, রিফাত, রায়হান, ফয়সাল, মারুফ এবং শিপনকে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে হিযবুত তাহরীরের পুস্তিকা ও ‘উসকানিমূলক লিফলেট’সহ গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি শিপন ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন এস আই ইলিয়াস হোসেন মোল্লা। এরপর চলতি বছরের ২ জানুয়ারি এ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. জাহিদুল কবির অভিযোগ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরু করেন। কিন্তু এরপর চারটি তারিখ পার হলেও কোনো সাক্ষীকে হাজির করা যায়নি। সাক্ষীদের আনতে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেও ফল পাওয়া যায়নি। আগামি ২৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ রয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কলাবাগানের বশিরউদ্দিন সড়কের জামে মসজিদের সামনে ‘সরকাবিরোধী ও উসকানিমূলক’ লিফলেট বিতরণের সময় সোহান হাফিজ নামের ত্রিশোর্ধ এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার সঙ্গে থাকা আরও ৭/৮ জন সে সময় পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সোহানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আাইনে কলাবাগান থানায় মামলা হয়। ওই বছরই ২৪ এপ্রিল পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দেন। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত অভিযোগ গঠন করে সোহানের বিচার শুরু করলেও দুটি ধার্য তারিখে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এ মামলায় স্বাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে আগামি বছরের ১৪ মার্চ। খিলগাঁওয়ের একটি মসজিদের ফটকে উগ্রবাদী লিফলেট বিলির সময় ঢাকার তিলপাপাড়ার আহমেদ নিজামকে (২৬) গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই থানার এস আই মো. কামরুল ইসলাম মামলা করলে তদন্ত করে অভিযোগপত্র দেন এস আই কামরুজ্জামান। চলতি বছরের ১৪ জুন চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত নিজামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেও এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি সাক্ষী না আসায়। আগামী ১০ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী তারিখ রয়েছে। বাড্ডার ইসলামিয়া কমিল মাদ্রাসার প্রধান প্রবেশপথ থেকে উসকানিমূলক লিফলেট বিলির সময় জামালপুর সদর থানার ছেনিটিয়া মধ্যপাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম মনিরকে গ্রেফতার তরে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর এস আই নূরুল ইসলাম খান অভিযোগপত্র জমা দেন ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে। এ বছর ১৫ মার্চ মনিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর দুটি তারিখ গেলেও কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। এ মামলার পরের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি। হিযবুত তাহরীর কর্মীদের বিরুদ্ধে এ আদালতে থাকা অন্যান্য মামলার চিত্রও একই রকম। আর এর কারণ হিসেবে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কথা বলেছেন এ আদালতের পেশকার ইফতেখার আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত সাক্ষীদের পরোয়ানা পাঠাই। কিন্তু পুলিশের কোনো গরজ নাই। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, সাক্ষীরা আসবে। আদালতে আসার জন্য তাদের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। নথিপত্রে দেখা যায়, অধিকাংশ মামলার ক্ষেত্রেই আসামিরা হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেছে। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতেই হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) শিক্ষক মহিউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে উত্তরা মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলাটি বিচারাধীন। ২০১০ সালে মামলা হওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন হলেও চার বছরে রাষ্ট্রপক্ষে মাত্র সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়া সম্ভব হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদের সামনে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টার ও লিফলেট বিলি করার সময় হিযবুত সদস্য তানভীর আহম্মেদ, সাইদুর রহমান রাজিব ও তৌহিদুল আলমকে পেট্রোল বোমাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহম্মেদের নির্দেশেই তারা সেখানে গিয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ আরও দুই জনকে যোগ করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে থাকে বিচার। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালের ৬ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললে সেপ্টেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মহিউদ্দিন ২০১০ সালের ২০ এপ্রিল গ্রেফতার হওয়ার পর ২০১১ সালের ৩ মে হাই কোর্ট থেকে জামিন পান। পরের বছর কারাগার থেকে মুক্ত হন। তিনি সে সময় দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। হিযবুত তাহরীরের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও দ্বিতীয় অতিরক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতেও। এর মধ্যে প্রথম আদালতের পেশকার মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেছেন, দীর্ঘসূত্রতার চিত্র সবখানে একইরকম। সীমান্তরক্ষা বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনায় উসকানিমূলক পোস্টার ও লিফলেটসহ ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ ধানম-ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ইন্সটিটিউট অফ কষ্ট এ- ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্টস অফ বাংলাদেশের ছাত্র মো. রাফি আহমেদ চৌধুরী এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তানজির হোসাইন চৌধুরীকে। প্রথমে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হলেও পরে উসকানিমূলক পোস্টার ও বিবৃতি প্রচারের অভিযোগে মামলা হয় ধানম-ি থানায়। ওই বছর ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়; পরের বছর ২৮ অক্টোবর ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওই দুই তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার নথিতে দেখা যায়, ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে একজনও সাক্ষী আনতে পারেনি। ২০১৬ সালের ৪ অগাস্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. গোলাম রব্বানী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন। এর এক বছরের বেশি সময় পর চলতি বছর ২৯ নভেম্বরে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী পরিদর্শক মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মদ। সাক্ষ্য গ্রহণের ৩৪টি ধার্য তারিখে মাত্র দুই জনের সাক্ষ্যের পর আগামি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার পরবর্তী তারিখ রয়েছে। দ্বিতীয় বিশেষ দায়রা জজ আদালতের পেশকার শেখ মো.আশিকুর রহমান জানান, এ আদালতে আরও ৬/৭টি মামলা রয়েছে হিযবুতকর্মীদের বিরুদ্ধে। সবগুলোতেই সাক্ষীদের উপস্থিতির হাল একই রকম। পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, বিচারে বিলম্বের জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। কোন কোন স্মারকে কোন কোন থানায় কোন আদালত থেকে কী মামলায় পুলিশের নামে সাক্ষ্য দেওয়ার সমন হয়েছে- তা বললে আমি খোঁজ নিয়ে বলতে পারতাম অভিযোগগুলো নিয়ে। ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত থেকে কয়েক বছর আগে অবসরে যাওয়া বিচারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলার বাদী বা তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সদস্যরা বদলি হলে বা পদোন্নতি পেয়ে অন্য কর্মস্থলে গেলে তাদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। পুলিশের নাম, পদবি, বাবা-মায়ের নাম, স্থায়ী ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য নিয়ে কোনো ডিজিটাল ডেটাবেইজ আগে ছিল না। এখন যে প্রযুক্তি এসেছে, তাতে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বসে এক ক্লিকেই কে কোথায় আছে তা পাওয়া সম্ভব; যদি আন্তরিকতা থাকে। ঢাকা বারের আইনজীবী দুলাল মিত্র বলেন, হিযবুত তাহরীরের কর্মীদের গ্রেফতারের যেসব ঘটনা রাজপথে বা জনতার ভীড়ের মধ্যে হয়েছে, সেখানে পুলিশ বাদে অন্য সাক্ষীরা বেশিরভাগই ভাসমান। মামলা হওয়ার পর বিচার শুরুর আগেই হয়ত অনেকের ঠিকানা পাল্টে যায়। এ কারণে একেবারে সাধারণ পথচারীদের জব্দ তালিকার সাক্ষী বানানো উচিত না। আইন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষ্য আইনের আধুনিকায়নের জন্য তারা বিশেষজ্ঞ ও প্রবীণ আইনজীবীদের সঙ্গে বেশষ কয়েক বার বসেছেন। আসামিদের হাজিরা, সাক্ষ্য নেওয়া ভিডিও কনফারেন্সে করার জন্য আইন তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ আইন পাস হলে সমস্যা অনেক কমে আসবে।
সদে পাঁচবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হকের জানাজা হয়েছে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে। গতকাল রোববার সকালে জানাজার পর এই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে। ছায়েদুল হকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার সকালে মৃত্যু হয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ছায়েদুল হকের। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। গতকাল রোববার সকালে ছায়েদুল হকের কফিন জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় নিয়ে আসার পর তার একমাত্র ছেলে ডা. এসএম রায়হানুল হক রীতি অনুযায়ী সমবেতদের কাছে বাবার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াসহ সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন জানাজায়। আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মত সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন ছায়েদুল হককে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রয়াত এই নেতার কফিনে ফুল দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি দলের পক্ষে নূর-ই-আলম চৌধুরী এবং বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষে বিরোধী দলীয় হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ছায়েদুল হকের মত নেতার স্থান পূরণ করা সম্ভব নয়। তার এবং মহিউদ্দিন চৌধুরীর মত নেতার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি হল। তার সততা ছিল প্রশ্নাতীত। ছায়েদুল হক এমন নেতা ছিলেন, যার বাড়িতে এখনও টিনের ঘর। ক্ষমতায় থাকার কোনো মোহ বা লোভ ছাড়াই তিনি রাজনীতি করে গেছেন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির রাশেদ খান মেনন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে ছায়েদুল হক ছিলেন একজন যোদ্ধা নেতা। তিনি পাঁচবার নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছিলেন- এতেই জনগণের মধ্যে তার অবস্থান প্রমাণ হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবেও তিনি সফল ছিলেন। বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম স্থান লাভ করেছে, এর কৃতিত্ব তারই। সংসদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে ছায়েদুল হকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে, যেখান থেকে তিনি পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে আরেকবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর